আমার মত অনেকে আছেন যারা জীবনের সব থেকে বড় একটা সিদ্ধান্ত অনেকটা নিজের উপর বিশ্বাস রেখেই নিয়ে থাকে আর তা হলো পরিবার এর সবার মতের বাইরে যেয়ে ঢাকার বাইরে পড়তে যাওয়া ।
আমার মত অনেকে আছেন যারা জীবনের সব থেকে বড় একটা সিদ্ধান্ত অনেকটা নিজের উপর বিশ্বাস রেখেই নিয়ে থাকে আর তা হলো পরিবার এর সবার মতের বাইরে যেয়ে ঢাকার বাইরে পড়তে যাওয়া ।
হ্যা ঠিক ধরেছেন । আমি অন্যদের কথা বলতে পারবো নাহ কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জেদ বা ফ্যাসিনেশন থেকে আমার ক্লাস এর অনেকেই আছেন যারা রাজধানীর বাইরে গেছেন পড়তে, রাজধানীতে থাকার সুযোগ পেয়েও বা নিজের বাড়ির আশে পাশে পেয়েও ।
শুরুটা হয় বাসা থেকে ৩০০/৪০০ কিমি দূরে যেয়ে শুরু করা পথ ।
আমাদের চিন্তা ভাবনায় তখনো কলেজ এর আচ থেকেই যায় । জাস্ট কলেজ পাশ করা , স্বপ্নে বিভর এক ছেলে বা মেয়ে কত শত আশা নিয়ে যায় দূর পথ পাড়ি দিয়ে ।
এর পর ??
এর পরের গল্প টা খুলে বলি হয়তো গল্প মিলে যাবে অনেকের সাথে আবার এখনকার গল্প আরো ভিন্নতরো হতে পারে আবার আরো ডাউনগ্রেডেড ও হতে পারে ।
ভাবেন তো, আপনার জন্ম দিনে, ক্লাস শুরুর আগে আপনার ডাক পড়েছে পরচিত হতে হবে । নিজের নাম পরিচয় নতুন করে দেয়া শিখতে হবে । শিখতে হবে কিভাবে নম্র ভদ্র হতে হবে । শিখতে হবে আরো বিচিত্র তথ্য । পারফর্ম করতে হবে নানান পার্ফরমেন্স । কিন্তু বিষয়টা তত টুক পর্যন্তই ঠিক থাকে যতক্ষন পর্যন্ত একটা মানুষকে মোরালি ডাউন করা না হয় । কিন্তু বিষয়টা এমন লেভেল এ চলে যায় যখন মোরালি এত ডাউন করে দেয়া হয় যে আপনার বাসায় আসার পর মনে হবে কালকেই বাসা চলে যাব থাকবো নাহ আর এই অচেনা শহরে । এমনো আরো নানান কিছু মনে হয় । এগুলান হজম করতে হয় ভালো ভাবেই । এটা অবশ্য কম বেশি সব যায়গায়তেই আছেই । এখনো হয়তোবা নাই । থাকতেও পারে ।
তবে আমার অনেক অনেক সিনিয়ারদের কাছে যে ধরণের গল্প শুনেছি সেসব আমরা পাই নাই , আফসোস আমি যদি সেই সব সিনিয়ার দের সময় পরচিত হতে যেতে পারতাম । এই পরচিত পর্বে নিজেকে ছোট করতে করতে একদম যখন আর শ্বাস নেয়ার উপায় নাই ঠিক তখনি আশার আলো যাগায় নতুন ক্লাস নতুন বন্ধু বান্ধুবি শিক্ষক পরিবেশ ।
আশায় বুক বেশে সবাই ছোটে ডিপার্ট্মেন্ট এর দিকে । এর পর কিছুদিন আশা যেগে থাকে । নিত্য নতুন আশা দেখে তখনো অনেক স্বপ্ন উকি দেয় , কিন্তু এর মাঝেই অনেকে ট্রাক থেকে সরে যাওয়া শুরু করে যাদের কে বোঝাতে সক্ষম হয় পারিপার্শ্বিক পরিবেশ যে আসলেই চিল আর চিল , সব এমনেই পার হয়ে যাবে । ভাই এনারা কিন্তু যোগ্যতা নিয়েই এসেছে সবাই ।
এর পর আসল খেলাটা শুরু হয় । কেউ শুরুতেই বুঝে যায়, বুঝে বুঝে পড়ে মুকস্থ করো কেননা এত সময় পাবা না এক্সাম এ তাই এত স্বপ্ন দেখার দরকার নাই যে ইঞ্জিনিয়ারিং মানেই ইঞ্জিনিয়ারিং । এই সংখ্যাটা নেয়াতই অনেক কম । আর প্রথমবার , ৬ মাসের কর্ম ফল যখন সবার সামনে স গৌরভ এ টাঙ্গায় দেয়া হয় তখনি শুরু হয় বিভেদ । ভাই বিশ্বাস করেন এই শ্রেনীকরন সাদা-কালো বা উচ্চ বংশ-নিন্ম-বংশের থেকেও খারাপ হয় ।
অথচ কি হবার কথা ছিলো, উচ্চশিক্ষা অর্জনে কিন্ডারগার্টেন এর মত বিহাভের বাইরে গিয়ে, শ্রেনীকরনের বাইরে গিয়ে সবাই সমান, সবার যোগ্যতা আছে এরকমি হবার কথা । আপনি কি ভাবছেন ? একটা স্কুল এর প্রথম হওয়া ছেলে বা মেয়ে একটা কলেজ এর টপার কখনো ভেবেছিলো একদিন এভাবে হেয় প্রতিপন্ন হতে হবে পদে পদে শুধু ৩ সংখ্যার একটা নাম্বার এর জন্য ??
হ্যা ঠিক ধরেছেন, ডিপ্রেশন তো আর এমনি এমনি একদিনে আসে নাহ, পদে পদে আপনাকে জাজ করা হবে আপনার ফল দিয়ে, পদে পদে আপনাকে মেরুকরনে ফেলা হবে আপনার ফল দিয়ে, পদে পদে আপনাকে অপমান সহ্য করতে হবে আপনার ফল দিয়ে , আপনার বন্ধু বান্ধবি ছেড়ে চলে যাবে নতুন দলের সন্ধানে । নানা আমি যা বলছি তা আমার চোখের দেখা , এখনো হয়তো এরকমি চলছে ।
এ তো গেলো আশায় গুড়েবালি র কেবল শুরু । এই জিনিস চলতে থাকবে ৮ বার বা তারো অধিকবার । চারপাশের পরিবেশ ই যেখানে মুল্যায়ন করে শুধু এতটুকু সংখ্যা দিয়ে সেখানে আপনি কি আশা করেন যে নিজের বানানো নোট ট্রাংক থেকে আপনাকে বের করে দিবে ফোটোকপি করে পড়ে পাশ করার জন্য বা নিজের বানানো কিছু খুব সহজলভ্য হবে বাকিদের জন্য ?? কোনদিন ই নাহ । এটাই বাস্তব চিত্র ।
যতদিন সবাইকে একসাথে নিয়ে না হোক বড় একটা অংশ কে একসাথে নিয়ে না ওঠার মানুষিকতা আসবে ততদিন পরিবেশ ডিটারিয়োরেট করবেই । লিখে রাখেন আজকের অবস্থাও একদিনে হয় নাই ।
এর পরের অংশ টা আরো স্পর্শকাতর । এখানে ৯৯ঃ১ অনুপাতেও আসে কিনা সন্দেহ মেয়েরা । সেখানে পদে পদে নানান সমস্যার সম্মুখীন তো হতেই হয় । সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে আলাদা করে দেখা । সব কাজে পারলে বাদ রেখেই চলা । আবার অনেক ক্ষেত্রে তো এমনো দেখেছি এতদূর কেন পড়তে এসেছে , দূর মানে দুরত্ব নয় , দূর মানে স্কুল কলেজ এর গন্ডি কেন পার হয়ে এত দূরে এসেছে তাই নিয়েই অনেকে চিন্তা করে । তাদের বিষয়ে হয়তো তারাই আরো ভালো বলতে পারবে ।
এর পরের বিভীষিকা টা হচ্ছে গাইডলাইন এর অভাব । মন খুলে কথা বলবেন কার সাথে ? অল্প কিছু মানুষ আপনার মানুষিকতার হবে কিন্তু তা আপনি খুজেই পাবেন অনেক পরে । তত দিনে মোরালিটি কত দূরে গেছে আপনি খুজেই পাবেন নাহ ।
আপনি কি জানেন , একজন এলাম্নাই হিসাবে আপনার কয়েকটা বাক্য একটা রানিং ছত্রের মনোবল কতটা বাড়ীয়ে দিতে পারে ? স্বপ্ন দেখতে শেখায় তাদের এই অল্প কয়েকটা বাক্য চয়ন ।
অক্সিজেনের অভাবে ভোগা মানুষকে যেমন কাগজে মোড়ানো বাতাস দিলেই অনেক বড় মনে হয় ঠিক আপনাদের গল্প আর গাইডলাইন গুলোন ও এমনি । আর তা যে শুধু চতুর্থ বর্ষে থাকা ছাত্রের জন্য অনেক তা নয় । সবার জন্যই প্রযোজ্য ।
কিন্তু এত সময় কি আছে আমার আপনার ?? আসলেই কি নেই সময় আমাদের ! আসলেই কি চলে আসার সাথে সাথে সব শেষ ? আমরাই না বলি জীবনের শ্রেষ্ঠ্য সময় কাটিয়ে এসেছি আমরা তাহলে আমাদের কি আদৌ কিছুই করার নাই !!
যা বলেছি এর ব্যতিক্রম ও আছে , হয়তো অনেকে এর কিছুই ফেচ করে নাই । হয়তো এমনো আছে কোন কিছু ফেচ করার আগেই পার হয়ে গেছে চার বছর ।
আজ আপনি বের হয়ে গেছেন । কাল পরিবর্তন না আসলে পরশু হয়তো আপনার ই ছোট ভাই বোন ছেলে মেয়ে গিয়ে ফেচ করবে অনেক ডিফিকাল্টিস । এখন বলতে পারেন ডিফিকাল্টিস তো সব জায়গায় ই থাকে । হা থাকে তবে কেহ ই চায় না শুনতে তার জীবনের শ্রেষ্ঠ্য জায়গা থেকে প্রতিনিয়ত খারাপ খবর আসুক ।
আপনি আমি চাইলে পরিবর্তন আসবে । আর একদল মানূষের হাতে আছে এই পরিবর্তন এর অনেক বড় চাবিকাঠি আর তার বড় অংশ জুড়ে আছে আমার আপনার মত এলামনাই ও রানিং শিক্ষার্থী এবং শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমন্ডলী 🙂
Comments
Post a Comment